নিউজ ফ্রন্টলাইনার ওয়েব ডেস্ক, অতনু হুই,৫ ই মে:কার্ল মার্কসের জন্মের২০৩ বছর পরেও মার্কবাদের গুরুত্ব আজও অপরিসীম।করোনা মহামারীর যন্ত্রনাকাতর কালে গোটা বিশ্বের সামনে সমাজতান্ত্রিক বিকল্প ভাবনাটি পুণরায় সামনে আসছে।কাজেই এই সময় কমিউনিস্ট ইস্তাহার সহ মার্কসের সৃজনশীল দিকগুলি নিয়ে নতুন করে গভীর চর্চা প্রয়োজন।এই বিশ্বে আর্থিক বৈষম্য বাড়ছে এবং তা থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে বিশ্ববাসীর মার্কসবাদের প্রতি নতুন করে আগ্রহ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
মার্কসবাদ আসলে কর্মের দিকনির্দেশ। তাই নিরন্তর চর্চা ও প্রয়োগই পারে মার্কসবাদকে প্রতিনিয়ত জীবন্ত করে রাখতে।
২০০৫ খ্রীঃ বি বি সি রেডিও-৪ এর এক ভোটে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চিন্তানায়ক হিসাবে কার্ল মার্কস প্রথম স্থান অর্জন করেন।এ থেকে বোঝা যায় জন্মের ২০০ বছর পরে আজও তিনি কতোটা সমাদৃত।
মার্কসের জন্মভূমি ট্রীয়ের শহরে মার্কসের জন্মদিনে এখনো উৎসব পালন করা হয়। মার্কসের জন্মের ২০৩ বছর পরে,ছোট্ট টিলায় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা বাড়ীটির দিকে আঙুল তুলে এখনো বড়রা ছোটদের চেনায় সমাজ পরিবর্তনের ত্রিকালদর্শী এই মানুষটির জন্মস্হানকে।
বর্তমান ধনতান্ত্রিক ইউরোপে মার্কসকে স্মরণীয় করে রাখতে তার জন্মের ২০০ বছরে-মার্কসের ছবি সম্বলিত ডলার (ইউরো) প্রকাশিত হয়েছে।
বর্তমান ধনতন্ত্রের সংকটে বিশ্বে সর্বাধিক বিক্রিত পুস্তক হলো মার্কসের -‘ক্যাপিটাল’। পোপ থেকে পাপারাতজী সবার হাতে এই বই। এই বিশ্বে এখন সর্বাধিক প্রকাশিত পুস্তকের একটি -বাইবেল,অপরটি কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো।
জ্ঞানতত্ত্ব এবং সমাজ জীবনের ব্যপক অন্বেষণের পরিনতিতে শ্রমিক শ্রেণীর পার্টি এবং তার সর্বপ্রথম বিপ্লবী কর্মসূচি হিসাবে হাজির হয় মার্কস-এঙ্গেলসের দুনিয়ার জুড়ে ঝড় তোলা বিপ্লবী কমিউনিস্ট ইস্তাহার- (ম্যানিফেস্টো অফ্ দ্যা কমিউনিস্ট পার্টি)। ম্যানিফেস্টো ভিত্তি হলো দ্বান্দ্বিক ও ঐতিহাসিক বস্তুবাদ। এবং এটিই দেশে দেশে কমিউনিস্ট পার্টির পথ চলার একমাত্র দৃষ্টিভঙ্গি।লেনিন বলেছেন এটি – স্পষ্টতা ও ঔজ্জ্বল্যে এমন এক বিশ্বধারনা চিত্রিত করেছে যা সুসঙ্গত বস্তুবাদেকে সন্নিবেশিত করে সমাজজীবনকে শ্রেনী সংগ্রামের পথে মুক্তির দিক নির্দেশ করে।
ধর্মতন্ত্র ,সন্ত্রাসবাদ ,সাম্রাজ্যবাদ, সামন্ততন্ত্রের অবশেষ সবাই কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে আবারও এক জোট হয়েছে| মার্কসের মৃত্যুর পর এঙ্গেলস্ সহ মাত্র১১ জন মানুষ তাঁকে সমাহিত করতে উপস্থিত ছিলেন লন্ডনের হাইগেট সমাধি ক্ষেত্রে।এঙ্গেলস মর্মস্পর্শী বক্তৃতায় সেদিনই বলেছিলেন, “মার্কসের কীর্তি পৃথিবীতে অক্ষয় হয়ে থাকবে”। আর আজ পৃথিবীর ১৭৫ বেশী দেশে লাল পতাকা নিয়ে কোটি কোটি মানুষ সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রামে রত রয়েছেন। কারণ মার্কসবাদ বিজ্ঞান, তাই তা সত্য, তাই তা দেশে দেশে এত জনপ্রিয়। আজ পর্যন্ত কোনো বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারই বস্তুবাদ, তার দ্বান্দ্বিক চরিত্রকে অগ্রাহ্য করতে পারেনি। তাই আজ ও ২০৩ বছরে নট আউট এবং প্রাসঙ্গিক আর এখানেই মার্কসবাদী তত্ত্বের শ্রেষ্ঠত্ব।